ডাউনলোড করুন ফ্রীতে হুমায়ুন আহমেদের পিডিএফ বই - জনম জনম

বইয়ের নাম:জনম জনম
লেখক:হুমায়ূন আহমেদ।

বইটির রিভিউ দেখুন:-
নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জনম জনমের গল্প। এই গল্পটি তিথিদের পরিবারের।তিথির বাবা জনাব জালালউদ্দিন।বয়স হয়েছে।মাস্টারি ছেড়েছেন,দুইটা চোখ প্রায় নষ্ট।সারাদিন ঘরে শুয়ে-বসে চা খাওয়া,এটা-ওটা ভাল-মন্দ রান্না খেতে চাওয়া আর চোখের চিকিৎসার জন্য সবাইকে বিনয়ের সুরে একটু অনুরোধ করা ছাড়া কোন কাজ নেই।বাজারের কাজটি তিথির মা মিনু ই করেন।ঘরে দুই ছেলে আছে।থাকলেও তাদের উপর কোন ভরসা নেই মিনুর।বড় ছেলে হিরু।কথায় কথায় ইংরেজি বলা,কাজ-কর্ম না করে রাত-বিরাতে বাইরে থাকা আর অ্যানা নামের একটি মেয়ের সাথে প্রেম-করা নিয়ে পড়ে আছে।শুধু তাই নয় এলাকার পীরের কাছে সময়-অসময়ে যাবতীয় পরামর্শ নেয় সে।হিরুর ছোট ভাই টুকু।ধানমণ্ডির গ্রিন বয়েজ লিটারেরি ক্লাব এর সদস্য সে।একটু আকা-আঁকি করে,রুপকথার গল্প লিখতে পারে।তবে ভাইয়ের মত সেও একসময় বাইরে থাকতে শুরু করে।বড় মেয়ে অরু,আব্দুল মতিনের ঘরে দু-সন্তান নিয়ে বেশ সংসার করছে।
মিনুর একমাত্র ভরসাস্থল ছোট মেয়ে তিথি।আসলে জালালউদ্দিনের সংসার টাই কোনোমতে তিথির জীবনের দামে কেনা জীবিকায় চলছে।পিঁপড়ার মত দিন-রাত তাকে কাস্টমারের কাছে থাকতে হয়।নাসিম নামে এক দালাল তাকে মালদার পার্টির সন্ধান দেয়।তিথির জীবনে দেখা ভাল মানুষগুলির সে একজন।নাসিম তাকে আপন বোন এর মত স্নেহ করে।গভীর রাতে তিথির ফিরবার পথে সে নিজে গিয়ে খানিকটা পথ এগিয়ে দেয়।হাতে একশ টাকার নোট ও গুজে দেয়।
বিচিত্র এই পৃথিবীতে বিচিত্র লোকের বাস।তিথির সাথে বিচিত্র লোক গুলির দেখা হয় দিনে রাতে।তিথি তার একহারা,শ্যামবরন
,আকর্ষণীয়,সুন্দর মাখনের মত শরীর টা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাতে উজাড় করে দেয়।না দিয়ে উপায় কি?নিষ্ঠুর পৃথিবীর বাস্তবতা আরও বেশি নিষ্ঠুর!নির্মম-নিষ্ঠুর দারিদ্রতা,পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ,ভালোবাসা আর সময়-ভাগ্য তাকে এই জঘন্য পেশার সাথে গিট্টু লাগিয়ে দিয়েছে।সে কি কখনো মুক্তি পাবে?
ব্যবসায়ি দবির উদ্দিন এর বাসায় ক্যানছার আক্রান্ত স্ত্রী ফরিদা শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।ফরিদার একটি মেয়ে আছে।রোগ-শোক সুখের অন্তরায়।বিছানায় পড়া স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা,সহানুভূতি দেখানো যায় তবে তার সাথে শুয়ে কাম-পিপাসা মেটান যায়না বোধহয়।শরীরের এই চাহিদা কে অস্বীকার করার সাহস কারো আছে কি??? না নেই। দবির উদ্দিন সাহেব তাই পিপাসা মেটাতে চাতকের মত বের হ।,তিথি নামের ২১ বছরের একটি সুন্দর,উপচে পড়া যৌবনা,স্নিগ্ধ,আকর্ষণীয় বেশ্যাকে পেয়ে যান।তবে তিথির মায়াবী,বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা,কথাবার্তা,ভাবগম্ভীরতায় তিনি মুগ্ধ হন।তিথির কথা নিজের স্ত্রীকেও জানান।তিথি র সাথে ফরিদার কথাও হয় একদিন।
বিয়ের আগের দিন সন্ধায় হলুদের আসর থেকে হলুদ শাড়ী আর মুখে কাচা হলুদ মেখে এক কাপড়ে খালি হাতে হিরুদের বাসায় এসে উপস্থিত হয় অ্যানা।ফরিদা মারা যাওয়ার আগে তিথিকে দেবার জন্য তার জমানো টাকা গুলো দবিরউদ্দিনের হাতে দিয়ে যান।আব্দুল মতিন বাসা থেকে বের করে দেয় অরুকে।
তিথির দেয়া টাকায় হিরুর ছোট রেসটুরেন্ট ভালোই চলছে।ছোটবেলায় দৈনিকে রুপকথার গল্প লেখা টুকু আজ বেশ বড় হয়ে গেছে।মুখে বিশাল দাড়ি-গোঁফ আর লেখা-লেখিও শুরু করবে ভাবছে।অরুকে একটা এনজিও তে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় তিথি।মাস দুয়েক পড়ে পরিচালক বিদেশী বাবুর হাত ধরে অনেক দূরে চলে যায় অরু।
হিরুর বেশ আয় উন্নতি চলে এসেছে।বাবা কে সে প্রাইভেট ক্লিনিকে চোখের অপারেশন করায়।তিনতালা বাড়ির কাজও শুরু করে দেয়।বাড়ি থাকলে গাড়ি থাকা চাই।রিকনডিশনড একটা গাড়িও কিনে ফেলে।
জালালউদ্দিনের চাচাতো ভাই মনজুর সাহেব তার ছোট মেয়ের বিয়ের নেমন্ত্রনপত্র নিয়ে দীর্ঘদিন পর তিথিদের বাসায় এসেছেন।তিথি তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করে। চা বানিয়ে দেয়। "মা,তিথি,বিয়েতে অবশ্যই এসো কিন্তু।"
"জী,চাচা,যাবো।অবশ্যই যাবো।আপনি আমাকে ছোটবেলা কত আদর করতেন।আপনার আদর ভুলতে পারিনা।"
মনজুর সাহেব অস্বস্তি বোধ করলেন। তিথিকে বেশ কয়েকবছর আগে দেখেছিলেন তিনি।সেই অভাবের সময় জালালউদ্দিন দু-এক শ করে টাকা আনানোর জন্য তিথিকে তার কাছে পাঠাতো।তিনি নিজ হাতে তিথিকে হালুয়া রেঁধে খাউয়াতেন।তারপর একদিন বৃষ্টির রাতে তিথিকে জোর করে...............!
সে কথা অবশ্য তিথি কাওকে বলেনি।তিথিদের এসব বলতে নেই।জনম জনম ধরে তিথিরা সবাইকে ভাল রাখে,নিজেরা ভাল থাকতে পারেনা।

তাহলে বইটি ডাউনলোড:ডাউনলোড করুন জনম জনম
Previous
Next Post »
Thanks for your comment