ছয় রোমাঞ্চ - থ্রিলার অনুবাদ সংকলন অনুবাদক : কাজী আনোয়ার হোসেন বইটি মিডিয়া ফায়ার থেকে সরাসরি ডাউনলোড করুন

বই : ছয় রোমাঞ্চ
ঘরানা : থ্রিলার অনুবাদ সংকলন
অনুবাদক : কাজী আনোয়ার হোসেন
প্রকাশনী : সেবা
প্রকাশকাল : প্রথম প্রকাশ- মার্চ ১৯৬৭
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১৫৯
ফরম্যাটঃPDF পিডিএফ বই
সৌজন্যেঃFree bangla pdf books ডাউনলোড
রেজুলেশনঃ ৬০০ DPI



Download sarvar link 2

প্রথমেই বলে নিচ্ছি, এটি অনেক পুরাতন একটি বই। কালজয়ী 'সেবা প্রকাশনী' র প্রথম দিকের একটি অনুবাদকর্ম। প্রখ্যাত গণিতবিদ, গবেষক ও দাবাড়ু কাজী মোতাহার হোসেন (কাজীদার মরহুম পিতা) বইটিকে একটি সাহসী উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছিলেন।
.
এখন আসছি বইয়ে সংকলিত গল্পগুলো প্রসংগে। এই বইতে সংকলিত হয়েছে বিশ্বের সেরা(তৎকালীন) ছয়টি রোমাঞ্চকর গল্পের অনুবাদ। একে একে সবকটি গল্পের কিছু কিছু অংশ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
.
১. বাঁশের ফাঁদ (রবার্ট এস. লেমন)- সভ্যজগৎ থেকে বহু দূরে জংগলে চাকরি করে জন মেথার। ক্রিস্টমাসের ছুটির আগমুহূর্তে শেষ একটা কাজ ঘাড়ে এসে পরলো, মাংসভুক কুয়াব্যন্ডান মাকড়শা যোগাড় করতে হবে। খুঁজতে খুঁজতে একা হয়ে গেলো মেথার। পাহাড়ের ওপরের ঘন বাঁশে ঢাকা এলাকা পারি দেবার সময় পায়ের নিচে 'মট' করে শব্দ হলো। কিছুক্ষণ পরে সে নিজেকে আবিষ্কার করলো কুয়াসদৃশ এক গভীর গর্তের তলদেশে। আহত, সাথে শুধু একটিমাত্র ছুরি। হঠাৎ দেখতে পেলো ঝাকে ঝাকে কুয়াব্যন্ডন মাকড়শা এগিয়ে আসছে। গর্তটা ওদেরই আবাসস্থল...
.
২. রবাহূত (এইচ. এইচ. মানরো)- গ্র্যাডউইজ আর স্নায়েম পারিবারিক দুশমন। সারাক্ষণই পরস্পরের ক্ষতি করার ফিকিরে থাকে। সুযোগ পেলে প্রাণে মারারও পরিকল্পনা করে। এক ঝড়ের রাতে দুই সেয়ানে মুখোমুখি হলো। দুর্ভাগ্যবশত বড় একটি গাছ শিকড়চ্যুত হয়ে চাপা দিলো দুজনকে। আহত অবস্থায় পাশাপাশি আটকা পরলো দুই শত্রু...
.
৩. সর্বনেশে পিঁপড়ে (কার্ল স্টিফেনসন)- তিনটে বছর ধরে অনাবৃষ্টি, বন্যা, মহামারীর সংগে মুকাবিলা করে বিশাল খামার দাড় করিয়েছে লেনিনজেন। কিন্তু এবার আসছে দুর্বার এক প্রাকৃতিক শক্তি, দৈবাৎ দুর্যোগ! দশ মাইল লম্বা আর দুই মাইল চওড়া-পিঁপড়ে আর পিঁপড়ে। একেকটা হাতের বুড়ো আঙ্গুলের সমান লম্বা, লালচে কালো গায়ের রং। জীবন্ত কালো ছাঁয়ার মতো নেমে এল ওরা, ফেলে আসা পথে সমস্ত সবুজের চিহ্ন মুছে গেলো ভোজবাজির মতো। প্রতিরোধের জন্য পরিখা খনন করে তাতে পানি ভরা হয়েছে। কিন্তু পরিখার কাছে থামলোনা ওরা, ঝাঁপিয়ে পরলো পানিতে। একটা ডুবছে, তো পাঁচটা তার ওপরে ভর করে ভাসছে। কি হবে এখন...
.
৪. উত্তপ্ত আগস্ট (উইলিয়াম ফ্রায়ার হারভে)- একজন চিত্রশিল্পী, তাড়াহুড়ো করে এঁকে ফেললো জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ স্কেচ। বিষয়বস্তু, কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মৃত্যুদন্ডাদেশ পাওয়া এক আসামী। চেহারাটা হুট করেই মাথায় এসেছিলো। এমন চেহারার কাউকে কোনোদিন দেখেনি সে। ঘটনাক্রমে বহুদূরের এক সমাধিস্তম্ভ নির্মাণকারীর বাড়িতে সাময়িক আশ্রয় নেয় শিল্পী। একি! এ যে হুবহূ স্কেচ এর মানুষটা। একটা কবর ফলক খোদাই করছে সে। আশ্চর্যের ব্যাপার, খোদাইকৃত নাম এবং জন্মতারিখ শিল্পীর সাথে হুবহূ মিলে যায়। খোদাইকারি এমনকি নামটা শোনেওনি কোনোদিন, খেয়ালের বশে লিখেছে। মৃত্যুর তারিখ ও খোদাই করেছে সে। তারিখটা আজকের...
.
৫. অগ্নি প্রত্যাশা (জ্যাক লন্ডন)- বরফ শীতল হেন্ডারসন ক্রীক। প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে আজ, শূণ্যের নিচেও ৭৫ ডিগ্রি। কুকুর নিয়ে ক্যাম্পে ফিরছে একজন মানুষ। গাল, নাক, এমনকি জুতার মধ্যে পা ও অসাড় হয়ে যাচ্ছে , হঠাৎ বরফ ভেঙে পড়ে গিয়ে হাটু পর্যন্ত ভিজে গেলো। আঙুলগুলো অসাড়, দেশলাই ধরতে পারছে না। আগুন চাই, একটু আগুন...
.
৬. সবচেয়ে বিপদজনক শিকার (রিচার্ড কনেল)- জাহাজ থেকে পানিতে পড়ে গেলো রেইনসফোর্ড, সাঁতরে উঠলো 'জাহাজ ডুবি দ্বীপ' এ। দ্বীপের মালিক শিকারি জেনারেল য্যারফ, যে আজকাল পশু শিকারে রোমাঞ্চ খুঁজে পায় না। অদ্ভুত প্রস্তাব দিলো রেইনসফোর্ডকে, "আপনাকে দেবো কিছু খাবার আর একটা শিকারের ছুরি। আমার হাতে থাকবে ক্ষুদ্রতম ক্যালিবার আর নিম্নতম পাল্লার একখানা পিস্তল। যদি তিনদিন আমার হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারেন, বেঁচে যাবেন। আর যদি ধরা পড়েন, তাহলে... "
.
.
বইটি কেমন, সেটা নাহয় নাইবা বললাম। শুধু এটুকু বলবো, প্রথমে বইখানা অনেকটা অনাগ্রহভরে হাতে নিয়েছিলাম। কিন্তু ছেঁড়াফাটা, ধুলোমাখা, পোকায় খাওয়া বইটা পরবর্তী সাড়ে তিন ঘন্টা হাত থেকে নামাতে পারিনি। ১ম, ৩য় ও ৬ষ্ট গল্পতিনটি অসাধারণ। ৫ম গল্পটাও দারুন, তবে ২য় ও ৪র্থ গল্পদুটো মোটামুটি, কিন্তু ফেলনা নয়।
৩৩ বছর আগে প্রিন্ট করা হয়েছে বইটা, প্রথম এডিশন তো আরো আগের। সেসময় আজকের মতো অত্যাধুনিক ছাপাখানা বা সুযোগ-সুবিধা ছিলো না। তারপরেও বইটিতে নেই কোনো প্রিন্টিং মিস্টেক, অনুবাদে নেই কোনো অসামঞ্জস্যতা।
.
যদি কখনো বইখানা হাতে পান, পড়ে দেখতে পারেন। বইটি আপনাকে নিরাশ হতে দেবে না।
.
.
# সৈকত (A Lone Traveller)
[এটা আমার লেখা প্রথম রিভিউ। বোধহয় আকৃতিতে কিছুটা বড়ই হয়ে গিয়েছে। লিখেছিলাম অনেকদিন আগে, কিন্তু প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। যদি কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি]

Previous
Next Post »
Thanks for your comment